গরমে শীতলতার পরশ পেতে এসির জুরি নেই । প্রতি বছরই এসির বিক্রি বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। তবে গ্রাহকদের একটি বড় অংশই বিদ্যুৎ বিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। অনেকেই আবার বিদ্যুৎ বিল বেশি হওয়ার ভয়ে এসি চালু করতে চান না। অন্যদিকে এসি সর্বক্ষণ চালিয়ে রাখাটা পরিবেশের জন্যও খারাপ বটে। গ্রীষ্মকালে ঘরের বিদ্যুৎ খরচের অনেকটাই চলে যায় এসি বা এয়ার কন্ডিশনারের পেছনে। এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই  জেনে না জেনে অতিরিক্ত খরচ করে ফেলি । তবে আপনি চাইলেই কিন্তু এসির এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে পারেন। কীভাবে? চলুন জেনে নিই।


১) তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন

এসির তাপমাত্রা অবশ্যই ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে হবে।  এসি যত কম তাপমাত্রায় চালানো হবে, তত বেশি  চড়চড় করে বাড়বে বিদ্যুৎ বিল ।  এ কারনে  লোড শেডিং হতে পারে পারে।  ঘুমাতে যাবার সময়ে তাপমাত্রা  সঠিক রাখুন।

২) দরকার না হলে বন্ধ করে দিন
সব সময় এসি চালিয়ে রাখবেন না। গরম যখন অসহনীয় মনে হবে তখনই এসি ব্যবহার করুন। রুম থেকে বের হলে এসি বন্ধ করে দিন। বাইরে যাওয়ার সময় রুমের এসি বন্ধ হয়েছে কিনা তা ভালো করে দেখে  নিন।

৩) এসি পরিষ্কার রাখুন
নিয়মিত এসি পরিষ্কার রাখুন। এসির ফিল্টারটি নিজেই মাসে অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। ময়লার কারনে এসি স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে না। তাই বছরে কমপক্ষে একবার Master Clean থেকে Cleaning সার্ভিস নিন ।

৪) টাইমার ব্যবহার করুন
রুম অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তা শরীরে জন্য ক্ষতিকর । তাই  রাতে স্লিপ মোডে অথবা এসিতে টাইমার ব্যবহার করুন যাতে রুম ঠান্ডা হয়ে গেলে আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায় । প্রয়োজন অনুযায়ি আবার চালু হয়ে রুম ঠাণ্ডা করে । এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ।

৫) ফ্যান ব্যবহার করুন
রান্না ঘরে এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন যাতে গরম সারা রুমে ছড়িয়ে না পড়ে। এসির তাপমাত্রা অতিরিক্ত না কমিয়ে ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রী  রেখে, ফ্যান ছেড়ে দিন। এতে রুম দ্রুত ঠান্ডা হবে।

৬) জানালা-দরজা ভালোভাবে বন্ধ  কিনা দেখুন
অনেক বাড়িতেই জানালা-দরজা এবং দেয়ালের মাঝে ছিদ্র বা  ফাঁকফোকর থাকে। এসবের কারণে রুম সহজে ঠান্ডা হতে পারে না। এসব ফাঁকফোকর বন্ধ করে ফেলুন। এতে এসি দ্রুত রুম ঠাণ্ডা করতে পারে ।

৭) ঘরের দরজা বন্ধ রাখুন

এসি চালানোর সময় রুমের দরজা – জানালা বন্ধ রাখুন।  এতে রুম দ্রুত ঠাণ্ডা হয় ।   এবং বিদ্যুৎ খরচ কম হয়ে থাকে ।

৮) দিনের বেলায় পর্দা ব্যবহার করুন
দিনের বেলা ঘরে তাপ ঢোকার উৎসগুলিকে বন্ধ করুন। জানালা ও দরজার সামনে ভারী সাদা পর্দা টানা থাকলে রোদে রুম গরম করতে পারে না। পর্দা ব্যবহার করলে রুমের ভেতরের তাপমাত্রা শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ কমানো সম্ভব। সাদা পর্দা ব্যবহার করলে সূর্যের ৮০% তাপ ঘরে প্রবেশ করতে পারে না।  ফলে অনেক সময়ে এসি চালানোরই দরকার হয় না ।

৯)আউট ডোর ইউনিট সঠিক স্থানে রাখুন
এসির আউট ডোর ইউনিট খোলা জায়গায় এবং ছায়াতে রাখলে একই সাথে বিদ্যুৎ বিল এবং এসির স্থায়িত বৃদ্ধি পায়  । অনেকেই এ বিষয়ে তেমন সচেতন থাকেন না এবং বাইরে রোদের মধ্যে এই অংশটি রেখে দেন।

এসি কেনার সময় বিবেচনা করুন
পুরনো এসি বারবার মেরামত না করে  নতুন এসি কিনুন। পুরনো এসির তুলনায় নতুন মডেলের এসি প্রায় ৫০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে ।

এছাড়া ইনভার্টার বা ডাবল ইনভার্টার এসি অন্যান্য  এসির থেকে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়ে থাকে । ঘরের আকার-আকৃতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ক্ষমতার এসি কিনুন। ফলস সিলিং ব্যবহার করে এসির আওতাভুক্ত এলাকা কমিয়ে আনুন।

পোর্টেবল এসি ব্যাবহার করুন
বাড়ির একটি কক্ষকে ঠাণ্ডা রাখতে চাইলে পোর্টেবল এসি ব্যবহার করা যেতে পারে। আধুনিক পোর্টেবল এসিতে বিদ্যুৎ খরচ অনেক কম আসে।  যদি পুরো বাড়ির একটিমাত্র রুম ঠাণ্ডা রাখতে হয়, তাহলে পোর্টেবল এসি ব্যবহার করুন।

রাতের বেলায় তাপমাত্রা এমনিতে কম থাকে, সে সময়ে এসি বন্ধ করে দরজা-জানালা খুলে দিতে পারেন। এতে ঠান্ডা বাতাস ঘরে চলাচল করবে। এতে রুমে দুর্গন্ধ দূর হবে।  সেন্ট্রাল এসি ব্যবহার করলে যে রুমগুলোকে শীতল করার প্রয়োজন নেই, সেগুলোকে আওতার বাইরে রাখুন।
এভাবে নিয়মমেনে এসি চালালে বিদ্যুৎ বিল হাতের নাগালে চলে আসবে । এবং এসি দীর্ঘ দিন ধরে কোন ঝামেলা ছাড়াই  চলবে ।

গরমে  এসিতে common কিছু সমস্যা হয়ে থাকে যেমন  ঠাণ্ডা কমে যাওয়া, ভিতরে শব্দ হওয়া, এসি থেকে পানিও পড়া । এসির যেকোন ধরনের সমস্যায় আমাদেরকে কল করুন – 01880 161680 ।
এই বিষয়ে আর জানতে Click করুন ।